রজব মাসের ফজিলত ও করণীয়ঃ
আসসালামু আলাইকুম, আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আজ আপনাদের রজব মাসের ফজিলত নিয়ে কিছু কথা বলব। আজকের ফজিলতের কথা শুনে আশাকরি অনেক উপকৃত হবেন।
| The mosque |
আল্লাহর রাসূল ﷺ বলেন – রজব হলাে আল্লাহর মাস এবং শাবান আমার মাস এবং রামাযান আমার উম্মার মাস। ~ আসসুতী, হাদীস: ১২৬৮২
ইমাম আবুল ফাতহ ইবনুল ফাওয়ারিস রহঃ উনার আমালীতে হযরত হাসান রাঃ থেকে মুরসাল-সূত্রে বর্ণনা করেন – নিশ্চয় রজব একটি মহিমান্বিত মাস, ভালাে আমলের কয়েকগুণ সওয়াব দেওয়া হয়।
যে ব্যক্তি এই মাসে একদিন সিয়াম-সাধনা করে তা পূর্ণ একবছর সিয়াম-সাধনার মতাে। হাদীসটি ইমাম আর-রাফিয়ী (রহঃ) হযরত সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন – নিশ্চয় রজব আল্লাহর মাস। এটিকে বধির বলা হয়।
জাহিলিয়া যুগে লােকেরা এই মাসে এলে তাদের অস্ত্র-সন্ত্র বন্ধ রাখতো এবং সেসব খুলে রাখতাে।
এতে মানুষ এই মাসে নিরাপদে থাকতাে, সকল রাস্তা-ঘাট নিরাপদ থাকতাে, কেউ কারাে জন্য আতঙ্কিত হতাে না- মাস শেষ অবধি। ~ আর-রাফিয়ী,খন্ড ৩, পৃ. ৪৩৯ ইমাম আত-তাবারানী (রহঃ) হযরত সাঈদ ইবনে আবু রাশিদ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন – রজব মাসে একটি দিন ও একটি রাত এমন রয়েছে, যে-ব্যক্তি সেই দিন সিয়াম পালন করবে এবং সেই রাতে ইবাদত যাপন করবে সে যেন একশত বছরকালের একযুগ সিয়াম পালন করলাে এবং একশত বছর ইবাদত যাপন করলাে। সেটি ২৭ রজব।
এই মাসে আল্লাহ তাআলা হযরত মুহাম্মদ ﷺ কে প্রেরণ করেছেন। ~ আত-তাবারানী, জাল-মু’জামুল কবীর, খন্ড ৬, পৃ. ৬৯, হাদীস: ৫৫৩৮ ইমাম ইবনে আবু শায়বা (রহঃ) ও ইমাম আত-তাবারানী (রহঃ) উনার আল-আওসাতে বর্ণনা করেন যে, হযরত আবু কালাবা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, জান্নাতে একটি প্রাসাদ রয়েছে যা রজব মাসে সিয়াম পালনকারীদের জন্য ।
~ ইবনে আবু শায়বা,
খন্ড-২, পৃ. ৩৪৫, হাদীস: ৯৭৫৮ হযরত আনাস রাঃ থেকে বর্ণিত,
হযরত রাসূলুল্লাহ ﷺ রজব আসলে বলতেন, হে আল্লাহ! রজব ও শাবানে আমাদের জন্য বরকত নাযিল করুন এবং রমযান আমাদেরকে নসীব করুন।
~ আল-বায়হাকী, শুআবুল ঈমান,
খন্ড-৩, পৃ. ৩৬৭, হাদীস: ৩৮০০ ইমাম আশ-শীরাযী রহঃ উনার আলকাবে এবং ইমাম আল-বায়হাকী রহঃ উনার শুআবুল ঈমানে হযরত আনাস রাঃ থেকে বর্ণনা করেন যে, রজব মাসের প্রথম দিনের সিয়াম পালন তিন বছরের কাফফারা হয়ে যাবে।
দ্বিতীয় দিনের সিয়াম পালন দুই বছরের কাফফারা হয়ে যাবে,
তৃতীয় দিনের সিয়াম পালন এক বছরের কাফফারা হয়ে যাবে এবং এরপরের সিয়ামগুলাে এক মাসের কাফফারা হয়ে যাবে।
~ আল-বায়হাকী, শুআবুল ঈমান, খন্ড-৩, পৃ. ৩৬৭, হাদীসঃ ৩৮০০
ইমাম আবু মুহাম্মদ আল-খালাল রহঃ উনার ফাযায়িলু শাহরি রজবে হযরত আবদুল্লাহ রাঃ থেকে বর্ণনা করেন যে, রজবে একটি রাত, যে-রাতে ইবাদতকারীর জন্য একশত বছরের সাওয়াব লেখা হবে। রাতটি হলো ২৭ রজব।
যে-ব্যক্তি এ-রাতে বার রাকাত সালাত আদায় করবে যার প্রত্যেক রাকাতে একবার ফাতিহা, একশত বার ইস্তিগফার, একশত বার “সুবহানাল্লাহে ওয়ালহামদুলিল্লাহে ওলা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার” পড়ে এরপর নবী করীম ﷺ এর ওপর একশত বার দরুদ শরিফ পড়বে এবং ইহ-পরকালীন যেকোনাে বিষয়ে ইচ্ছানুযায়ী নিজের জন্য দুআ করবে আর দিনে সিয়াম পালন করবে, নিশ্চয় আল্লাহ তা’লা এ-ধরনের প্রত্যেকের দুআ কবুল করেন।
তবে যদি তারা বিপদ কামনা করে দুআ করে তাহলে তা কবুল হবে না। ~ আল-হাসান আল-খালাল, কাযায়িলু শাহরি রজব, পৃ. ৬২, হাদীস ১০ আল্লাহ তায়ালা আমাদের রজব মাসে এ সমস্ত আমাল করে নিজেদের আমলনামা বৃদ্ধি করার তৌফিক দান করুক এবং রজব ও সাবান মাসে বরকত দান করে রমজান পর্যন্ত পৌঁছিয়ে দিক। আমিন বেহুমাতি সায়্যিদিল মুরসালিন।
1 টি মন্তব্য
alhamdulillah,khub valo kichu jante parlam.keep it up.
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন