Ads

Labour day - ধনীদের স্বার্থে নির্মিত সভ্যতার মুখে মে দিবসে থুথু দিয়ে যেতে পারলাম না, মুতু! দিয়ে গেলাম।

সারা জীবন যে পরের জুতো পলিশ করে , সে
কোনোদিন ভালো এক জুড়ো জুতো পরেনি। মাথায়
ইট বহন করে যার সারাটা জীবন গেলো তার ঘরের
দেয়ালে এক টুকরো ইটও লাগেনি। টিন,স্টিল মিলে
যে শ্রমিক কাজ করে চকচকে রূপালী ঢেউটিন
নির্মাণ করে, তার ঘরের ছাদ দিয়ে অবিরাম বৃষ্টির
পানি পড়ে। যে শ্রমিক মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে আকাশ
ছোঁয়া ভবন বানায়, রাতে এসে সে বস্তিতে ঘুমায়।
যে অন্যের ঘর রঙ দিয়ে চাকচিক্যময় করে তোলে ,
তার সারা জীবনটাই বিবর্ণ রয়ে যায়। যে হীরার
খনিতে জীবন দেয়-তার ঘরে জুটে না দুবেলা আহার।
জামদানি বুনে যে মেয়েটির জীবন গেলো- তার
বসনে জুটলোনা কোনোদিনও কোনো জামদানির
স্পর্শ । 
যে গোয়ালা দুধ দোহন করে সারাটা জীবন পার
করে দেয়- তার সন্তানেরা বারো মাস অপুষ্টিতে
ভোগে। যে কাঁধে ভার বহন করে মঞ্চ তৈরি করে ,সে
কোনোদিনও মঞ্চে বসার জায়গা পায়নি। যে কৃষক
রৌদ্র, বর্ষা মাথায় নিয়ে কাদা মাটির ভিতর পা
দাবিয়ে ধান বুনে সবার আহার যোগায় সে হয় মূর্খ,
অনাহারী। আর যে সফেদ পোষাক পরে শীতাতপ ঘরে
বসে ধান নিয়ে দু,চার লাইন কবিতা লেখে সে হয়
কবি, বুদ্ধিজীবী। যে দামী কাঠের পালঙ্ক তৈরী
করে অন্যের ঘরের শোভা বাড়ায়, রাতে এসে সে
চটের বিছানা পেতে মাটিতে ঘুমায়। যে মালি ধূসর
মাটিকে পুষ্পউদ্যান বানিয়ে ফুল ফুটায়-তার গলায়
কেউ কোনোদিন মালা দেয়নি ভাই। যে শ্রমিক ৩০
বছর ধরে চা বাগানে শ্রম দিয়ে যায়, তার ঘরে নেই
ভালো একটা চায়ের বাটি আর মাত্র ৩০ সেকেণ্ডের
চায়ের বিজ্ঞাপন করে মানুষ হয় মডেল,
সেলিব্রেটি। ধনী মানুষেরা যখন জাহাজে সমূদ্র
পার হয় সেটা হয় ভয়েজ বা জলযাত্রা। আর জীবনের
প্রয়োজনে নৌকায় যখন গরীবেরা সমূদ্রপার হয়,
তারা হয় অবৈধ অভিবাসী। ধনীরা যখন বিনোদনের
জন্য দেশে দেশে ঘুরে বেড়ায় ওরা হয় ট্যুরিস্ট। আর
গরীবেরা যখন পেটের ক্ষুধা নিবারণের জন্য এক
দেশে অন্য দেশে যায়-ওরা হয় রিফিউজি। ধনীরা
শিকার করলে তাদের গর্বিত নাম হয় হান্টার বা
শিকারী । আর গরীবেরা শিকার করলে তাদের নাম
হয় পাচার বা চোরাকারবারী। কারো হাতে ছুরি
থাকলে তাকে আমরা বলি  ছিনতাইকারি আর
কারো কাছে পারমানবিক বোমা থাকলে -তাকে
আমরা  স্যালুট করি। ধনীদের স্বার্থে নির্মিত
সভ্যতার মুখে মে দিবসে থুথু দিয়ে যেতে পারলাম
না, মুতু দিয়ে গেলাম।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.