পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা গ্রহানু সম্পর্কিত!
অনেক দিন যাবত সোশাল মিডিয়া গুলোতে একটা খবর নিয়ে বেশ তোলপাড় লক্ষ্য করেছি। সেইটা হলো পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা গ্রহানু সম্পর্কিত।
নাসা জানিয়েছিল এই গ্রহাণুটি আয়তনে ৪ কিলোমিটার। প্রতি ঘণ্টায় ৩১ হাজার ৩২০ কিমি গতিতে এগিয়ে আসছে। এই গতিতে এগিয়ে আসতে থাকলে ২৯ এপ্রিল পৃথিবীর কাছে চলে আসবে।কোনওভাবে পৃথিবীর সঙ্গে সংঘর্ষ হলে গোটা মানবসভ্যতা কয়েক সেকেন্ডে ধ্বংস হয়ে যাবে। কিন্তু আজকে ২৯শে এপ্রিল। এমন কোন ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে এখনো শুনিনি।
![]() |
| Photo: Collected |
বর্তমান বিশ্বে আধুনিক বিজ্ঞানী বা জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা প্রাকৃতিক বিপর্যয় দ্বারা পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার ঘোষণা দিয়ে আসছেন এবং বিগত কয়েক দশকে পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার দিন তারিখও উল্লেখ করেছেন। কিন্তু তা এতটুকু কার্যকর হয়নি। অতএব বুঝা যায়, আল্লাহর হুকুম ব্যতীত পৃথিবীর কোন কিছুই কার্যকর হয় না । আল্লাহ তা‘আলা ক্বিয়ামত সংঘটিত হওয়ার দিনক্ষণ গোপন রেখেছেন। তিনি একদিন তা প্রকাশ করে দেবেন, আর সঙ্গে সঙ্গে ক্বিয়ামত শুরু হয়ে যাবে।
আজকে শুধু কোরআন থেকে এই বিষয়ের উপরে কিছু লিখলাম।
- ক্বিয়ামতের গোপনীয়তা রক্ষার ঘোষণায় আল্লাহ তা‘আলা বলেন: ‘ক্বিয়ামত অবশ্যই আসবে, আমি তা গোপন রাখতে চাই, যাতে প্রত্যেকেই তার কর্ম অনুযায়ী ফল লাভ করে। সুতরাং যে ব্যক্তি ক্বিয়ামতের জ্ঞান রাখে না এবং নিজ প্রবৃত্তির অনুসরণ করে, সে যেন তোমাকে তা থেকে নিবৃত্ত না করে। নিবৃত্ত হ’লে তুমি ধ্বংস হয়ে যাবে’। [ত্ব-হা ১৫-১৬]
| গ্রহানু -Photo: Google |
- একই বিষয়ে অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন: ‘নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের গোপন রহস্য আল্লাহর কাছেই রয়েছে। ক্বিয়ামতের ব্যাপারটি তো এমন, যেমন চোখের পলক অথবা তার চাইতেও নিকটবর্তী। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব কিছুর উপর শক্তিমান’। [নাহল ৭৭]
- অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন: ‘বরকতময় তিনিই,নভোমন্ডল,ভূমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছু যাঁর।তাঁরই কাছে আছে ক্বিয়ামতের জ্ঞান এবং তাঁরই দিকে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে’। [যুখরুফ ৮৫]
- মহান আল্লাহ বলেন: ‘লোকেরা আপনাকে ক্বিয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলুন, এর জ্ঞান আল্লাহর কাছেই আছে। আপনি কি করে জানবেন যে, সম্ভবতঃ ক্বিয়ামত শীঘ্রই হয়ে যেতে পারে’। [আহযাব ৬৩]
- এ বিষয়ে এরশাদ হচ্ছে: ‘আপনাকে জিজ্ঞেস করে, ক্বিয়ামত কখন অনুষ্ঠিত হবে? বলে দিন, এর খবর তো আমার পালনকর্তার কাছেই রয়েছে। তিনিই তা যথাসময়ে প্রকাশ করবেন। আসমান ও যমীনের জন্য সেটি অতি কঠিন বিষয় হবে। তোমাদের উপর আকস্মিকভাবেই তা এসে যাবে। তারা আপনাকে জিজ্ঞেস করতে থাকে, যেন আপনি তার অনুসন্ধানে লেগে আছেন। বলে দিন, এর সংবাদ শুধু আল্লাহর নিকটেই রয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ লোকই তা জানে না’। [আ‘রাফ ১৮৭]
- এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন: ‘কাফেররা সর্বদা সন্দেহ পোষণ করবে যে পর্যন্ত না তাদের কাছে আকস্মিকভাবে ক্বিয়ামত এসে পড়ে অথবা এসে পড়ে তাদের কাছে এমন দিবসের শাস্তি, যা থেকে রক্ষার উপায় নেই। রাজত্ব সেদিন আল্লাহরই, তিনিই তাদের বিচার করবেন। অতএব যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম সম্পাদন করে তারা নে‘মতপূর্ণ কাননে থাকবে এবং যারা কুফরী করে এবং আমার আয়াত সমূহকে মিথ্যা বলে তাদের জন্য লাঞ্ছনাকর শাস্তি রয়েছে’। [সূরাঃ হাজ্জ ৫৫-৫৭]
- তিনি আরো বলেন: ‘যখন বলা হয়, আল্লাহর ওয়াদা সত্য এবং ক্বিয়ামতে কোন সন্দেহ নেই, তখন তোমরা বলে থাক আমরা জানি না ক্বিয়ামত কি? আমরা কেবল ধারণাই করি এবং এ বিষয়ে আমরা নিশ্চিত নই। তাদের মন্দ কর্মগুলো তাদের সামনে প্রকাশ হয়ে পড়বে এবং যে আযাব নিয়ে তারা ঠাট্টা-বিদ্রূপ করত, তা তাদেরকে গ্রাস করবে’।[জাছিয়া ৩২-৩৩]
- অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন: ‘ক্বিয়ামতের জ্ঞান একমাত্র তাঁরই জানা। তাঁর অজ্ঞাতসারে বাইরে কোন ফল আবরণমুক্ত হয় না এবং কোন নারী গর্ভধারণ ও সন্তান প্রসব করে না। যেদিন আল্লাহ তাদেরকে ডেকে বলবেন, আমার শরীকরা কোথায়? সেদিন তারা বলবে, আমরা আপনার নিকট নিবেদন করি যে, আমরা কিছুই জানি না’।[হা-মীম সাজদাহ ৪৭]
- উপরের আয়াত গুলোতে এই কথা স্পষ্ট যে কেয়ামতের দিন তারিখ আল্লাহ গোপন করে রেখেছেন। তিনি যখন ইচ্ছে কেয়ামত সংঘটিত করতে পারেন। এখন আমার প্রশ্ন কেয়ামত সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের দেয়া দিন তারিখ গুলো বিশ্বাস করা কি ঠিক?
- আসুন আমরা কোরআনের আয়াত গুলোর উপর পুরোপুরি বিশ্বাস স্থাপন করি। আল্লাহ আমাদের উত্তম বুঝ দান করুক।

কোন মন্তব্য নেই
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন